كتاب زبيدة إلى المامون بعد قتل إبنها الأمين

كتاب زبيدة¹ إلى المامون² بعد قتل إبنها الأمين...

كُلُّ ذَنْبٍ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِنْ عَظُمَ صَغِيْرٌ فَي جَنْبِ عَفْوِكَ. وَكُلُّ زَلَلٍ وَإِنْ جَلَّ حَقِيرٌ عِنْدَ صَفْحِكَ. وَذَلِكَ الَّذِي عَوَّدَكَ اللهُ، فَأَطَالَ مُدَّتَكَ، وَتَتَمَ نِعْمَتَكَ، وَأَدَامَ بِكَ الْخَيْرَ، وَرَفَعَ بِكَ الشَّرَّ. هذِهِ رُقْعَةُ الْوَالِهِ الَّتِي تَرْجُوكَ فِي الْحَيَاةِ لِنَوَائِبِ الدَّهْرِ وَفِي الْمَمَاتِ لِجَمِيلِ الذِّكْرِ. فَإِنْ رَأَيْتَ أَنْ تَرْحَمَ ضُعْفِي وَاسْتِكَانَتِي وَقِلَّةَ حِيْلَتِي وَأَنْ تَصِلَ رِحْيِي وَتَحْتَسِبَ فِيمَا جَعَلَكَ اللَّهُ لَهُ طَالِبًا وَفِيهِ رَاغِبًا فَافْعَلْ، وَتَذَكَّرُ مَنْ لَوْ كَانَ حَيًّا لَكَانَ شَفِيعِي إِلَيْكَ.

হে আমীরুল মুমিনীন! অপরাধ যত বড়ই হোক, আপনার মার্জনার সামনে অতি নগণ্য। পদস্খলন যত গুরতরই হোক, আপনার ক্ষমার কাছে খুইব সামান্য। এমন মহানুভবতাই আল্লাহ আপনার স্বভাবে দান করেছেন এবং আপনার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করেছেন। আপনার প্রতি তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করেছেন। আপনার মাধ্যমে সকল কল্যাণ অব্যাহত রেখেছেন। সকল অকল্যাণের গ্লানি মুছে দিয়েছেন। একজন দুঃখ-বেদনায় জর্জরিত অসহায় নারীর পত্র, যে জীবদ্দশায় বিপদ সংকটে আপনাকে পাশে পাবার আশা করে, আর মৃত্যুর পর আপনার সুন্দর আলোচনার প্রত্যাশা করে। অতএব আপনি যদি চান আমার দুর্বলতা, অসহায়ত্ব, ও বিপন্ন অবস্থার প্রতি করুণা করে আমার সাথে আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখবেন এবং আল্লাহ আপনাকে যে বিষয়ে আগ্রহী ও অনুরাগী করেছেন, তাতে সওয়াবের ভাগী হবেন, তাহলে করতে পারেন। আর তার কথা স্বরণ করুন, যিনি বেঁচে থাকলে অবশ্যই আমার জন্য আপনার কাছে সুপারিশ করতেন।

وَصَلَتْ رُفْعَتُكِ يَا أُمَّاهُ أَحَاطَكِ اللهُ، وَتَوَلَّاكِ بِالرِّعَايَةِ. وَ وَقَفْتُ عَلَيْهَا، وَسَاءَ نِي شَهِدَ اللَّهُ- جَمِيعُ مَا أَوْضَحْتِ فِيْهَا، لَكِنَّ الْأَقْدَارَ نَافِذَةُ، وَالْأَحْكَامَ جَارِيَةً، وَالْأُمُورَ مُتَصَرَّفَةٌ، وَالْمَخْلُوْقُوْنَ فِي قَبْضِتِهَا، لَا يَقْدِرُوْنَ عَلَى دِفَاعِهَا، وَالدُّنْيَا كُلُّهَا إِلَى شَتَاتٍ، وَكُلٌّ حَيَّ إِلَى مَمَاتٍ، وَالْغَدَرُ وَالْبَغْيُ حَتْفُ الْإِنْسَانِ وَالْمَكْرُ رَاجِعُ إِلَى صَاحِبِهِ. وَقَدْ أَمَرْتُ بِرَدَّ جَمِيعِ مَا أُخِذَ لَكِ، وَلَمْ تَفْقِدِي مِمَّنْ مَضَى إِلَى رَحْمَةِ اللَّهِ إِلَّا وَجْهَهُ، وَأَنَا بَعْدَ ذَلِكَ لَكَ عَلَى أَكْثَرَ مِمَّا تَخْتَارِينَ، وَالسَّلَامُ.

আম্মাজান! আপনার পত্রখানা আমার কাছে পৌঁছেছে। আল্লাহ আপনাকে হেফাজত করুন এবং যাবতীয় দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করুন। চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি আল্লাহ সাক্ষী, আপনার চিঠির যাবতীয় বিষয় আমাকে মর্মাহত করেছে। কিন্তু আল্লাহর ফায়সালা অবধারিত। দ্বীনের যাবতীয় বিধি-বিধান চলমান। শরিয়তের যাবতীয় বিষয় কার্যকর। সকল মাখলুক ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণে, তা প্রতিহত করার সাধ্য কারও নেই। পুরো জগত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে। সকল জীব মৃত্যুর মুখোমুখি হবে। সীমালঙ্ঘন ও বিশ্বাসভঙ্গ ধ্বংসের অন্যতম কারণ। আর প্রতারণার ফল প্রতারককেই ভোগ করতে হবে। তবে আপনার বাজেয়াপ্ত সম্পদ আমি ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যিনি আল্লাহর রহমতের কোলে চলে গেছেন আপনি শুধু তার বাহ্যিক দর্শন থেকে বঞ্চিত হবেন, আমি আপনার অভিপ্রায়ের চেয়েও বেশি কিছু করার জন্য প্রস্তুত। সালাম নিবেন। 

 [مختارات من أدب العرب - الجزء الأول]             

     

_____________________________

১. জুবাইদা ছিলেন আব্বাসীয় খলিফা হারুন আল-রশিদের স্ত্রী। তিনি ইরাকের মাওসেল নামক শহরে ১৪৯ হিজরি সনে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২১৬ হিজরি সনে বাগদাদে মৃত্যুবরণ করেন। খিলাফতে বিশেষ ভূমিকার কারণে তাকে আব্বাসীয় রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বিখ্যাত নারীদের একজন বলে মনে করা হয়। তিনি ছিলেন বিশ্বস্ত খলিফার আল-আমীন এর মা, যিনি তার ভাই আল-মামুন এর হাতে নিহত হন।

২. তিনি হলেন বাদশাহ হারুনুর রশীদের পুত্র আবুল আব্বাস আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি ১৭০ হিজরি সনে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ২১৮ হিজরিতে মৃত্যুবরণ করেন। ইলম, আমল, দৃঢ়সংকল্প, সহনশীলতা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান-গরিমায় তিনি ছিলেন বনু আব্বাসের গর্ব ও অহংকারের পাত্র। বিভিন্নমুখী জ্ঞান ও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। তবে তিনি যে কোনো বিষয়ের ফায়সালা করতে তাড়াতাড়ি করতেন এবং আইন-কানুন বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তার এই চিঠির উত্তর ছিল কল্যাণ বিবেচনা ও সান্তনামূলক। যা বাদশাহের শান এবং সন্তানের আনুগত্যকে চমৎকারভাবে প্রকাশ করছে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post